ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ব্যয় বেড়ে ২৯০০ কোটি টাকা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা ও আইনশৃঙ্খলা খাতে মোট বরাদ্দ নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এবারের নির্বাচনের জন্য বাজেট ধরা হয়েছে ২ হাজার ৯০০ কোটি টাকা, যা গত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের তুলনায় এক হাজার কোটি টাকা বেশি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, প্রবাসীদের ভোটাধিকার বাস্তবায়ন, বাড়তি আনুষঙ্গিক খরচ এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিকে এ ব্যয় বৃদ্ধির কারণ হিসেবে দেখছে ইসি।

সূত্র জানায়, এবার ২২টি খাতে নির্বাচন পরিচালনায় খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা এবং আইনশৃঙ্খলা খাতে ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। গত নির্বাচনে পরিচালন খাত ছিল ১৮টি; নতুন চারটি খাত সংযোজন হওয়ায় ব্যয়ও বেড়েছে।

পরিচালন খাতের ব্যয়

খাতওয়ারি ব্যয় ধাপের সংখ্যা ১৯৮টি। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় খরচ হচ্ছে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের ভাতা বাবদ, যার পরিমাণ ৫৩৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এছাড়া—

  • ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের যাতায়াত বাবদ ৯৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

  • প্রতিটি ভোটকক্ষের জন্য ৮০০ টাকা হারে তিন লাখ ২৯ হাজার ভোটকক্ষের জন্য ১৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা।

  • ২০ হাজার অস্থায়ী অতিরিক্ত ভোটকক্ষের জন্য সাত কোটি টাকা।

  • প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের চার্জার লাইট, ক্যালকুলেটর, স্ট্যাপলার ইত্যাদি জরুরি দ্রব্যাদির জন্য চার কোটি ৭০ লাখ টাকা।

  • ব্যালট পেপার, ফরম, প্যাকেট, ম্যানুয়েল ও নির্বাচনি সামগ্রী পরিবহন বাবদ ২৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা।

  • ব্যালট সামগ্রী মজুরি বাবদ পাঁচ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।

  • ডাক, বার্তাবাহক ও অন্যান্য ব্যয় বাবদ ৬৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

  • নির্বাচনসংশ্লিষ্ট আপ্যায়নে ৪৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর খরচ

নিরাপত্তা খাতে সবচেয়ে বড় অংশ যাবে আনসার বাহিনীর জন্য। এরপর পর্যায়ক্রমে পুলিশ, সেনাবাহিনী, র‌্যাব, বিজিবি এবং গ্রামপুলিশ-চৌকিদার-দফাদারদের জন্য বরাদ্দ থাকবে।

প্রশাসনিক ব্যয়

  • বিভাগীয় কমিশনারদের তদারকি, আপ্যায়ন ও যানবাহন ভাড়ায় ৩০ লাখ টাকা।

  • জেলা প্রশাসকদের জন্য মোট নয়টি খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে। এর মধ্যে মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের আপ্যায়নে ৩৪ কোটি ২০ হাজার টাকা এবং যানবাহনের জ্বালানি খাতে ১০ কোটি ৩৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

  • মহানগর দায়রা জজদের দায়িত্ব পালনে ছয়টি খাতে খরচ নির্ধারিত হয়েছে। এর মধ্যে আপ্যায়নে আড়াই লাখ টাকা, যোগাযোগ সরঞ্জাম ক্রয়ে ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং নিয়োজিত কর্মচারীদের ভাতা বাবদ সাত লাখ ৪২ হাজার টাকা।

অপ্রত্যাশিত বা জরুরি খাতের জন্য রাখা হয়েছে ১০ কোটি টাকা

ব্যয়ের ইতিহাস

বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচন খরচ ধাপে ধাপে বেড়েছে:

  • দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন: ১,৯০০ কোটি টাকা (পরিচালনায় ৬০০ কোটি, আইনশৃঙ্খলায় ১,৪০০ কোটি)।

  • একাদশ সংসদ নির্বাচন: ৭০০ কোটি টাকা, পরে তা বেড়ে হয় ১,০০০ কোটি।

  • দশম নির্বাচন: ২৬৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।

  • নবম নির্বাচন: ১৬৫ কোটি টাকা।

  • অষ্টম নির্বাচন: ৭২ কোটি ৭১ লাখ টাকা।

  • সপ্তম নির্বাচন: ১১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।

  • ষষ্ঠ নির্বাচন: ৩৭ কোটি টাকা।

  • পঞ্চম নির্বাচন: ২৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

  • চতুর্থ নির্বাচন: পাঁচ কোটি ১৫ লাখ টাকা।

  • তৃতীয় নির্বাচন: পাঁচ কোটি ১৬ লাখ টাকা।

  • দ্বিতীয় নির্বাচন: দুই কোটি ৫২ লাখ টাকা।

  • প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ৮১ লাখ ৩৬ হাজার টাকা।

আরও দেখুন

আজ শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী

আজ ১৫ আগস্ট, শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তাদের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *