আমেরিকা বাংলা নিউজ ডেস্ক : ২০২৫ সালে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা মহাকাশে এক বিরল রহস্যময় বস্তু শনাক্ত করেছেন। নাম দেওয়া হয়েছে 3I/ATLAS। এটি হলো মাত্র তৃতীয় আন্তঃনাক্ষত্রিক ধূমকেতু (Interstellar Comet) যা আমাদের সৌরজগতে প্রবেশ করেছে। এর আগে বিখ্যাত ʻOumuamua (1I) এবং 2I/Borisov আবিষ্কৃত হয়েছিল।
নাসার পর্যবেক্ষণ: নাসার (NASA) তথ্য অনুযায়ী, 3I/ATLAS বর্তমানে ঘণ্টায় প্রায় ১ লাখ ৩৫ হাজার মাইল বেগে ছুটে আসছে। এটি পৃথিবীর কাছাকাছি আসলেও কোনো সংঘর্ষের ঝুঁকি নেই, কারণ এর নিকটতম দূরত্ব হবে প্রায় ১.৬–১.৮ AU (প্রায় ১৫ কোটি মাইল)। নাসার বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যে হাবল টেলিস্কোপ এবং জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (JWST) দিয়ে বস্তুটিকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ শুরু করেছেন।
বৈজ্ঞানিক রহস্য ও বিতর্ক : পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে, ধূমকেতুর চারপাশে গ্যাস ও ধূলিকণার মেঘ (coma) এবং একটি ক্ষীণ লেজ রয়েছে, যা প্রাকৃতিক ধূমকেতুর স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য। তবে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী অ্যাভি লোয়েব (Avi Loeb)। তিনি দাবি করছেন, 3I/ATLAS হয়তো ভিনগ্রহী মহাকাশযান (Alien Spaceship) কিংবা মহাজাগতিক মাদারশিপ হতে পারে। যদিও মূলধারার জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা একে কল্পনাপ্রসূত ও বৈজ্ঞানিক প্রমাণহীন বলে মন্তব্য করেছেন।
বৈজ্ঞানিক গুরুত্ব : গবেষকরা মনে করছেন, এই ধূমকেতুটি অত্যন্ত প্রাচীন—সম্ভবত ৭ বিলিয়ন বছরেরও বেশি পুরনো, অর্থাৎ আমাদের সৌরজগতের আগেই এর সৃষ্টি হয়েছিল। তাই এটি পৃথিবীর বিজ্ঞানীদের জন্য এক অনন্য সুযোগ এনে দিয়েছে, যেখানে আন্তঃনাক্ষত্রিক বস্তু (Interstellar Object)-এর রাসায়নিক গঠন, উৎপত্তি ও মহাজাগতিক রহস্য নিয়ে নতুন তথ্য পাওয়া যাবে।
যদিও ভিনগ্রহী মহাকাশযান তত্ত্বটি জনমনে উত্তেজনা ছড়িয়েছে, তবে বাস্তবিক অর্থে এটি একটি প্রাকৃতিক আন্তঃনাক্ষত্রিক ধূমকেতু, যা মানবজাতিকে মহাবিশ্ব সম্পর্কে নতুন জ্ঞান দেবে। নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, অক্টোবর ২০২৫-এ সূর্যের কাছাকাছি আসার সময় 3I/ATLAS আরও উজ্জ্বল ও দৃশ্যমান হবে।