
আমেরিকা বাংলা ডেস্ক: আমেরিকায় ২০২৫ সালকে ঘিরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য আসছে বড় ধরনের ট্যাক্স পরিবর্তন। নতুন নিয়মগুলো না জানলে পড়তে হতে পারে বিপদে—জরিমানা, রিফান্ড হারানো, এমনকি গ্রিন কার্ড বাতিলের ঝুঁকিও রয়েছে। অন্যদিকে নিয়ম মেনে চললে পাওয়া যেতে পারে হাজার ডলারের ট্যাক্স রিফান্ড এবং আর্থিক সুরক্ষা।
আইআরএস-এর সর্বশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী, যদি কোনো প্রবাসীর বার্ষিক আয় একক হিসেবে ১৪,৬০০ ডলার বা দম্পতি হিসেবে ২৯,২০০ ডলারের বেশি হয়, তবে ট্যাক্স রিটার্ন ফাইল বাধ্যতামূলক। এমনকি আয় সীমার নিচে থাকলেও রিফান্ড পাওয়ার জন্য ফাইল করা উচিত। এফ-১ ভিসাধারী শিক্ষার্থী যারা ওপিটি বা সিপিটি-তে কাজ করছেন, তাদের ট্যাক্স দিতে হবে। এইচ-১বি ভিসাধারী কর্মীদের ক্ষেত্রেও বেতনের সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্যাক্স কাটা হলেও রিটার্ন না দিলে রিফান্ড হারানোর ঝুঁকি থাকে। গ্রিন কার্ডধারীদের জন্য নিয়ম আরও কঠোর—বাংলাদেশে থাকা আয় বা সম্পত্তিও রিপোর্ট করতে হবে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, বিদেশে ১০,০০০ ডলারের বেশি মূল্যের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, শেয়ার বা সম্পত্তি থাকলে তা ফর্ম ১১৪ (এফবিএআর)-এর মাধ্যমে রিপোর্ট করা বাধ্যতামূলক। নিয়ম না মানলে ১০,০০০ ডলার থেকে শুরু করে ১ লাখ ডলার পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। বাংলাদেশে থাকা জমি, ফ্ল্যাট বা এফডিআর—সবই এই রিপোর্টের অন্তর্ভুক্ত।
তবে সুখবরও আছে। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ট্যাক্স চুক্তি থাকায়, বাংলাদেশে পরিশোধিত ট্যাক্সের বিপরীতে আমেরিকায় ফর্ম ১১১৬-এর মাধ্যমে ট্যাক্স ক্রেডিট পাওয়া যায়। এর ফলে একই আয়ে দুইবার ট্যাক্স দিতে হয় না।
এছাড়া যোগ্য করদাতারা ৫,০০০ ডলার পর্যন্ত রিফান্ড পাওয়ার সুযোগও পাবেন। চাইল্ড ট্যাক্স ক্রেডিটে প্রতি সন্তানের জন্য ২,০০০ ডলার, আর্নড ইনকাম ট্যাক্স ক্রেডিটে নিম্ন আয়ের পরিবারের জন্য সর্বোচ্চ ৭,৮৩০ ডলার এবং শিক্ষা সংক্রান্ত ট্যাক্স ক্রেডিটে ২,৫০০ ডলার পর্যন্ত ফেরত পাওয়া যেতে পারে।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের সহায়তায় বাংলাদেশ দূতাবাস ওয়াশিংটন ডিসি ও নিউ ইয়র্ক কনস্যুলেটে ‘প্রবাসী ট্যাক্স সহায়তা ডেস্ক’ চালু করেছে। সেখানে ফ্রি সেমিনার, হেল্পলাইন ও অনলাইন পরামর্শ সুবিধা চালু রয়েছে। তবে জাল ট্যাক্স প্রিপেয়ারারদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে—কেবল আইআরএস অনুমোদিত প্রিপেয়ারারদের (যাদের পিটিআইএন নম্বর আছে) সাহায্য নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
২০২৫ সালের ট্যাক্স রিটার্ন ফাইল করার শেষ সময় ১৫ এপ্রিল ২০২৬ এবং এফবিএআর ফাইল করার শেষ সময় ৩০ জুন ২০২৬। এখন থেকেই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংগ্রহ শুরু করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, ট্যাক্স ফাইল করা শুধু আইনি বাধ্যবাধকতা নয়, এটি প্রবাসী জীবনের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ স্থিতির মূলভিত্তি। নিয়ম জানুন, সময়মতো ফাইল করুন, রিফান্ড পান এবং জরিমানা এড়ান—এটাই এখন আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
আমেরিকা বাংলা | আমেরিকার বাংলা খবর, কমিউনিটি ও বিশ্ব সংবাদ আমেরিকায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য সর্বশেষ বাংলা খবর, কমিউনিটি সংবাদ ও বিশ্ব আপডেট।