প্রায় সাত কোটি বছর আগে পৃথিবীর বৃহত্তম শিকারি প্রাণীদের দাপট ছিল সর্বত্র। তখনকার সব মহাদেশেই বিচরণ করত ভয়ঙ্কর সব ডাইনোসর, যাদের মধ্যে টাইরানোসরাস রেক্স (টি–রেক্স) ও রহস্যময় মেগারাপ্টর দ্রুতই পরিণত হয়েছিল দৈত্যাকৃতির শিকারিতে। সাধারণত ডাইনোসর সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায় মাটির নিচ থেকে খনন করে আনা সংরক্ষিত হাড় ও দাঁতের মাধ্যমে। তবে নরম টিস্যুর উপস্থিতি অত্যন্ত বিরল, যা পেলে প্রাচীন জীবনের ব্যাপারে অনেক গভীর তথ্য জানা সম্ভব হয়। ডাইনোসরের ডিএনএ এখনও না পাওয়ায়, এতদিন গবেষণা সীমাবদ্ধ ছিল মূলত শক্ত টিস্যু বিশ্লেষণে।
সম্প্রতি কানাডার রেজিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জেরিট লিও মিচেল এক বিরল আবিষ্কার করেছেন—টি–রেক্সের জীবাশ্মে রক্তনালি শনাক্ত। এই আবিষ্কার ডাইনোসরের জীবনধারা ও শারীরিক গঠন সম্পর্কে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। বিষয়টি নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে সায়েন্টিফিক রিপোর্টস জার্নালে।
মিচেল পার্টিকেল অ্যাকসিলারেটর ও উন্নত থ্রিডি মডেল ব্যবহার করে কানাডার রয়্যাল সাস্কাচোয়ান মিউজিয়ামে সংরক্ষিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় টি–রেক্স জীবাশ্ম—স্কটি—এর হাড় বিশ্লেষণ করেন। এই নমুনাটি টি–রেক্সের সবচেয়ে পূর্ণাঙ্গ জীবাশ্মগুলোর একটি। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, স্কটির পাঁজরে আঘাত সারানোর প্রক্রিয়ার চিহ্ন রয়েছে, যেখানে রক্তনালির কার্যকলাপ বেড়ে গিয়েছিল। সেই স্থানে বিস্তৃত খনিজ নেটওয়ার্ক পাওয়া গেছে, যা থ্রিডি মডেলের মাধ্যমে পরীক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।
মিচেলের মতে, জীবাশ্মের ভেতরের অংশ পরীক্ষা করা বড় চ্যালেঞ্জ, কারণ হাড় ক্ষতিগ্রস্ত না করে ভেতরের গঠন বোঝা জটিল। তাছাড়া জীবাশ্মকরণের সময় হাড়ের অনেক উপাদান ঘন হয়ে জৈব পদার্থ দিয়ে প্রতিস্থাপিত হতে পারে, যা বিশ্লেষণকে আরও কঠিন করে তোলে।
সূত্র: এনডিটিভি