ভিটামিন ‘বি’ আবিষ্কারের গল্প

ভিটামিনের ইতিহাসে ‘বি’ গ্রুপের ভিটামিন আবিষ্কার একটি চমৎকার অধ্যায়। উনিশ শতকের শেষ দিকে বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করেন—কিছু রোগ সরাসরি খাদ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত। বিশেষ করে, এশিয়ার কিছু অঞ্চলে ধান ভাঙার পর পালিশ করা চাল খাওয়া মানুষের মধ্যে বেরিবেরি নামের রোগ ছড়িয়ে পড়ে।

ডাচ চিকিৎসক ক্রিস্টিয়ান আইকম্যান প্রথম বুঝতে পারেন—এ রোগ কোনো জীবাণু দ্বারা নয়, বরং পুষ্টির ঘাটতির কারণে হচ্ছে। তিনি লক্ষ্য করেন, পালিশ করা চাল খাওয়ানো মুরগিরাও মানুষের মতোই অসুস্থ হয়ে পড়ে। কিন্তু যখন তাদের অপরিশোধিত, খোসাসহ চাল খাওয়ানো হয়, তখন উপসর্গ দূর হয়ে যায়।

এরপর গবেষণায় প্রমাণিত হয়—ধানের খোসায় থাকা এক বিশেষ উপাদান স্নায়ু ও বিপাকক্রিয়ার জন্য অপরিহার্য। ১৯১১ সালে পোলিশ জীবরসায়নবিদ কাজিমিয়ার ফাঙ্ক এই উপাদানকে আলাদা করতে সক্ষম হন। তিনি একে নাম দেন “ভাইটামাইন”—যার অর্থ জীবনের জন্য অপরিহার্য অ্যামাইন। এভাবেই আমরা প্রথম পাই ভিটামিন বি₁ বা থায়ামিন

পরে জানা যায়, ভিটামিন বি আসলে একটি নয়, বরং অনেকগুলো ভিন্ন ভিন্ন পুষ্টির সমষ্টি—যেমন বি₂ (রিবোফ্লাভিন), বি₃ (নায়াসিন), বি₆, বি₁₂ ইত্যাদি—যেগুলো শরীরের শক্তি উৎপাদন, স্নায়ুর কার্যক্রম এবং কোষের সুস্থতার জন্য অপরিহার্য।

সংক্ষেপে, চালের খোসার অদৃশ্য শক্তিই আমাদের হাতে তুলে দিয়েছিল ভিটামিন ‘বি’-এর রহস্য, যা আজও মানবস্বাস্থ্যের অন্যতম প্রধান রক্ষক।

আরও দেখুন

মেশিন লার্নিং এবং ডিপ লার্নিং যেভাবে শিখবেন

বর্তমান ডিজিটাল যুগে মেশিন লার্নিং (Machine Learning) এবং ডিপ লার্নিং (Deep Learning) প্রযুক্তি প্রতিটি শিল্পে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *