
রাশিয়া, চীন এবং ভারত ত্রয়ী আমেরিকার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে। সেই সাথে আফ্রিকায় ইরানের রপ্তানি বৃদ্ধির ঘটনা থেকে প্রমাণ হয় বিশ্বের বাণিজ্য সমীকরণ পরিবর্তিত হচ্ছে। এই সংবাদ প্যাকেজে এশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নের ওপর সংক্ষিপ্ত নজর দেওয়া যাক:
আফ্রিকায় ইরানের রপ্তানি বৃদ্ধি; সামনের সুযোগ এবং চ্যালেঞ্জ
ইরান-পূর্ব আফ্রিকা জয়েন্ট চেম্বার অফ কমার্সের প্রধান “মাসুদ বেরাহমান” ঘোষণা করেছেন: ফার্সি চলতি বছরের প্রথম চার মাসে আফ্রিকায় ইরানের রপ্তানি দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে এবং রপ্তানি গন্তব্যের সংখ্যা ২৯টি দেশ থেকে বেড়ে ৩৪টিতে দাঁড়িয়েছে।
শুল্ক বিভাগের তথ্য অনুসারে, এই বছরের প্রথম তিন মাসে আফ্রিকায় ইরানের রপ্তানি ছিল প্রায় ২৬০ মিলিয়ন ডলার। এই পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮৫ শতাংশ বেশি। এই উর্ধ্বমুখী প্রবণতা সম্ভবত প্রথম পাঁচ মাসেও অব্যাহত রয়েছে, যদিও সরকারী পরিসংখ্যান এখনও প্রকাশ করা হয় নি। ইরানের জয়েন্ট চেম্বার অফ কমার্সের প্রধান আফ্রিকার সাথে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে লজিস্টিক সমস্যা, মান এবং লাইসেন্স, মুদ্রা ঝুঁকি, অ-শুল্ক বাধা, জটিল শুল্ক আইন, পরিবহন এবং বীমা খরচ ও শিল্প পণ্যের বিক্রয়োত্তর পরিষেবা নেটওয়ার্কের দুর্বলতাকে বাধা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
বেরাহমান আফ্রিকায় ইরানের রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য ইরান-আফ্রিকা কূটনীতির সক্রিয়তা, রপ্তানি গন্তব্যের সম্প্রসারণ, রপ্তানি পণ্যের বৈচিত্র্য (যেমন খাদ্য, ওষুধ, সার, হালকা পেট্রোকেমিক্যাল এবং নির্মাণ সামগ্রী), বিনিময় উন্নয়ন এবং স্থানীয় মুদ্রার ব্যবহার, সমুদ্র পরিবহন রুটের উন্নতি এবং বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও জ্বালানি সংকটের প্রেক্ষাপটে আফ্রিকা মহাদেশের মৌলিক পণ্যের উচ্চ চাহিদাকে দায়ী করেছেন এবং ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে ১৪০৪ হিজরির দ্বিতীয়ার্ধেও রপ্তানি বৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত থাকবে।
রাশিয়া, চীন এবং ভারত; মার্কিন বাণিজ্য নীতির বিরুদ্ধে বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রতিরোধের ত্রিভুজ
ব্লুমবার্গ নিউজ এজেন্সি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রাশিয়া, চীন এবং ভারত বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে মার্কিন বাণিজ্য নীতির মুখোমুখি হতে সাহায্য করতে পারে। তিনটি দেশের মধ্যে জ্বালানি সহযোগিতা, যার মধ্যে রয়েছে চীনে রাশিয়ার গ্যাস রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য ‘পাওয়ার অফ সাইবেরিয়া-২’ পাইপলাইন প্রকল্প এবং ভারতের রাশিয়ার জ্বালানি অব্যাহতভাবে ক্রয়, মার্কিন চাপের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিফলন হিসাবে দেখা হয়েছে।
এই তিনটি দেশ বিশ্বের জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ এবং বিশ্বের মোট দেশজ উৎপাদনের প্রায় এক চতুর্থাংশ। তবে, ভারত ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা এবং বিদ্যমান উদ্বেগ তাদের পূর্ণ সহযোগিতাকে বাধাগ্রস্ত করেছে।
টেকসই বাণিজ্য এবং শুল্ক বাধা হ্রাস, আসিয়ানের জন্য একটি অগ্রাধিকার
দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলির সংগঠন আসিয়ান চীন, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া এবং উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের সাথে বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্ব সম্প্রসারণ করতে চাচ্ছে। নতুন প্রযুক্তির জন্য বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতার মধ্যে ডিজিটাল অর্থনীতি বিশেষ করে ‘আসিয়ান ডিজিটাল অর্থনৈতিক কাঠামো’র সমাপ্তিকে ভবিষ্যতের প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি হিসেবে দেখা হয়।
বিভাজন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং জ্বালানি সংকটের হুমকির মুখে, আসিয়ান পাওয়ার গ্রিড প্রকল্পটি পরিষ্কার শক্তির দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রতীক। জিসিসি এবং চীনের সাথে আঞ্চলিক প্রক্রিয়া এবং যৌথ উদ্যোগ শক্তিশালী করা ব্লকের সম্মিলিত প্রতিক্রিয়া ক্ষমতাও বৃদ্ধি করবে। ৬৬ কোটিরও বেশি জনসংখ্যার সাথে, আসিয়ান বিশ্বের সবচেয়ে গতিশীল বাজারগুলোর মধ্যে একটি এবং পূর্ব তিমুরের যোগদানের সাথে সাথে ২০২৫ সালের মধ্যে ১১ সদস্যে উন্নীত হবে। বৃহৎ শক্তি প্রতিযোগিতা তীব্রতর হওয়ার সাথে সাথে এবং শুল্ক যুদ্ধ বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে আসিয়ানের কেন্দ্রীয় ভূমিকা এবং স্বাধীনতা আগের চেয়েও বেশি অপরিহার্য।
আমেরিকা বাংলা | আমেরিকার বাংলা খবর, কমিউনিটি ও বিশ্ব সংবাদ আমেরিকায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য সর্বশেষ বাংলা খবর, কমিউনিটি সংবাদ ও বিশ্ব আপডেট।