বার্সেলোনার প্রতিভা আবিষ্কারের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে খ্যাত লা মাসিয়া। এই স্প্যানিশ ক্লাবের সবুজ গালিচার মাঠ থেকে উঠে এসেছে অসংখ্য কিংবদন্তি তারকা। লিওনেল মেসি, জাভি হার্নান্দেজ, আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা থেকে শুরু করে হালের পেদ্রি ও গাভি—তাদের সবাইকে তৈরি করেছে লা মাসিয়া। সবশেষ এই তালিকায় যুক্ত হয়েছেন লামিনে ইয়ামাল, মাত্র ১৮ বছর বয়সেই যে তরুণ ফুটবল বিশ্বকে বিস্মিত করেছেন। ২০২৫ সালের ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার ব্যালন ডি’অরের সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন ইয়ামাল, এবং সেরা তিনের মধ্যে এক জন হিসেবে তাকে ধরা হচ্ছে। ২০২৪-২৫ মৌসুমে দেশ ও ক্লাবের হয়ে অসাধারণ পারফরম্যান্সই তাকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে দাঁড় করিয়েছে।
২০২৪-২৫ মৌসুমে ঘরোয়া ট্রেবল জিতেছে বার্সেলোনা। লা লিগার সঙ্গে স্প্যানিশ সুপার কাপ ও কোপা দেল রে জয় করে এই কীর্তি অর্জন করেছেন হ্যান্সি ফ্লিকের দল। এই সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন ইয়ামাল। ২০২৪-২৫ মৌসুমে বার্সেলোনার হয়ে ৫৫ ম্যাচে ১৮ গোল ও ২৫টি অ্যাসিস্ট করেছেন তিনি। পরিসংখ্যান কেবল সংখ্যা জানায়, মাঠে তার কার্যকলাপ কতটা ভয়ঙ্কর ছিল তা বোঝাতে যথেষ্ট নয়। ডান প্রান্ত থেকে তার ড্রিবল প্রতিপক্ষের রক্ষণ ভেঙে দিয়েছে—মৌসুমজুড়ে ২৬০টি ড্রিবল দেখিয়েছেন স্প্যানিশ তরুণ, যা ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের মধ্যে সর্বোচ্চ।
জাতীয় দলের হয়ে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপেও নিজেকে প্রমাণ করেছেন ইয়ামাল। ২০২৪ সালের ইউরোপ চ্যাম্পিয়নশিপে স্পেনকে শিরোপা এনে তিনি রেকর্ডের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন। একটি গোল ও চারটি অ্যাসিস্ট করেছেন, যা ১৯৮০ সালের পর থেকে কোনো একক ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে সর্বোচ্চ। নকআউট পর্বের প্রতিটি ম্যাচে গোল বা অ্যাসিস্ট করার নজিরও তৈরি করেছেন। টুর্নামেন্টে সেরা উদীয়মান খেলোয়াড়ের পুরস্কারও জিতেছেন তিনি।
ক্লাব ক্যারিয়ারে ১১৫ ম্যাচ খেলে ২৫ গোল ও ৩৪ অ্যাসিস্ট করেছেন ইয়ামাল। দুটি লা লিগার পাশাপাশি একটি করে স্প্যানিশ কাপ ও সুপার কাপ জিতেছেন। জাতীয় দলের হয়ে ২১ ম্যাচে ৬ গোল ও ৯ অ্যাসিস্ট করেছেন। ২০২৪ ইউরোর শিরোপা জাতীয় দলের জার্সিতে জয় করে আরও মান বাড়িয়েছেন। ব্যক্তিগতভাবে ২০২৪ সালে স্পেনের সেরা তরুণ খেলোয়াড় এবং ২০২৫ সালে সেরা খেলোয়াড়ের খেতাব জিতেছেন। মাত্র ১৮ বছর বয়সেই ইয়ামালের অর্জনগুলো এতটাই অনবদ্য যে, ব্যালন ডি’অর যদি তার ঝুলিতে যুক্ত হয়, তাতে বিস্ময় হওয়ার কোনো কারণ থাকবে না।