শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কারে বাস্তবমুখী উদ্যোগ প্রয়োজন: অধ্যাপক আমানুল্লাহ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কারের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে বলেছেন যে, বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষাব্যবস্থা আধুনিকীকরণ অপরিহার্য। দেশের বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করে গবেষণার মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কারে তিনি সিপিডি ও সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বিশেষভাবে তিনি উল্লেখ করেছেন যে, দেশের উচ্চশিক্ষার প্রায় ৭০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণকারী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কারে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

রোববার রাজধানীর গুলশান ২-এ লেকশোর হোটেলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ৩৬৫ দিন’ শীর্ষক সংলাপে এসব মন্তব্য করেন প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ।

সংলাপের সভাপতিত্ব করেন সিপিডির ডিস্টিংগুইশড ফেলো প্রফেসর মুস্তাফিজুর রহমান। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান বিষয়ক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এবং কমিউনিস্ট পার্টি বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।

প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ, বিজিএমইএ প্রেসিডেন্ট মাহমুদ হাসান খান (বাবু), এলএফএমইএবি প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, ওয়ার্কার রিফর্ম কমিশনের চেয়ার সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আমিন, বিটিএমএ প্রেসিডেন্ট শওকত আজিজ রাসেল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ, মিডিয়া রিফর্ম কমিশনের সদস্য জিমি আমির এবং আইইউবির ভাইস চ্যান্সেলর ড. এম তামিম।

সংলাপে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ উল্লেখ করেন, ১৯৯২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়া সত্ত্বেও দেশের উচ্চ শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় কতটা কার্যকর ভূমিকা রেখেছে তা নিয়ে এখনও পর্যাপ্ত গবেষণা হয়নি। প্রতিবছর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ১০ লাখের বেশি গ্রাজুয়েট তৈরি করলেও তাদের কর্মক্ষেত্রে দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।

তিনি আরও বলেন, অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের কর্মক্ষেত্র উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় তথ্যপ্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। শিক্ষাক্রমে তথ্যপ্রযুক্তি ও ইংরেজিকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে কলেজগুলোতে সুশাসন, জবাবদিহিতা এবং শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতার অভাব এবং কলেজ পরিচালনা পর্ষদের দৌরাত্ম্য বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারের বড় বাধা।

সংলাপে শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, অর্থনীতিবিদ এবং অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সদস্যবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল আইনশৃঙ্খলা ও প্রশাসনিক স্থিতিশীলতা, টেলিফোনে আড়িপাতা ও মানবাধিকার, পুলিশ সংস্কার, ব্যাংক খাতের সংস্কার, কর্মসংস্থান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরাপত্তা, শ্বেতপত্র প্রণয়ন, স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ, সংবিধানের সংস্কার, দুর্নীতি দমন কমিশনের সংস্কার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং নাগরিক সংগঠনগুলোর কার্যক্রম সহজীকরণ।

 

আরও দেখুন

বহুমুখী সংকটে সরকারি চার ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ

দেশের সরকারি চার ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ দীর্ঘদিন ধরে বহুমুখী সংকটে ভুগছে। উন্নত শিক্ষার আশায় মেধাবী শিক্ষার্থীরা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *