
সাম্প্রতিক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ও আফগানিস্তানের তালেবান শাসনকে ঘিরে কূটনৈতিক যোগাযোগ ও উত্তেজনাপূর্ণ দাবিপত্র সামনে এসেছে — যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূতদের সঙ্গে তালেবানের আলোচনা, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বার্তা এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সতর্কতা। এই প্রতিবেদনে আমরা ঘটনাগুলো, তাদের প্রেক্ষাপট এবং সম্ভাব্য প্রভাব বিশ্লেষণ করছি।
কি ঘটেছে
গত কয়েকদিনে তালেবান নিজ সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করেছে যে যুক্তরাষ্ট্রের বিশিষ্ট প্রতিনিধি দল কাবুলে তালেবান নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে এবং বন্দিদের বিনিময় নিয়ে আপোশের একটি চুক্তি (prisoner swap) হয়েছে বলে দাবি করেছে।
একই সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক আন্তর্জাতিক সংবাদ সম্মেলনে জানান, যুক্তরাষ্ট্র চেষ্টা করছে আফগানিস্তানের বিখ্যাত বাগরাম (Bagram) বিমানঘাঁটি পুনরায় নিয়ন্ত্রণ করার পথে—এ বিষয়ে তিনি ভূ-রাজনৈতিক কারণে, বিশেষত চীনকে ঘিরে কৌশলগত গুরুত্ব ঘিরে উল্লেখ করেন। তালেবান ওই দাবিকে নিরপেক্ষ বা অস্বীকার করলেও কূটনৈতিক উত্তেজনা বেড়েছে।
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি—অবসরপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক ও মানবাধিকার গ্রুপ—রিপোর্ট দিয়েছে যে তালেবান শাসন দেশের তথ্যপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়েছে; সাম্প্রতি কিছুমাত্রায় ফাইবার-অপটিক ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা সংবাদ, মানবতাবাদী কাজ ও নাগরিক অধিকারকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নীতি: প্রতিশ্রুতি বনাম বাস্তবতা
যুক্তরাষ্ট্রের নীতি গত কয়েক বছরে দ্বিধাগ্রস্ত: সামরিক প্রত্যাহার ও কূটনৈতিক অনিশ্চয়তার পরে ওয়াশিংটন এখন তালেবানকে সম্পূর্ণভাবে অব্যাহতভাবে অস্বীকৃতি জানালেও নির্দিষ্ট অনুমোদিত আলোচনায় যুক্ত হয়েছে—বিশেষত যখন যুক্তরাষ্ট্রীয় নাগরিকদের মুক্তি ও গ্রাহ্য নিরাপত্তা বিষয়ে চাপ পড়ে। তবে মানবতাবাদী তহবিল ও সরকারি সহযোগিতা ব্যাপকভাবে সীমিত রাখা হয়েছে, কারণ সরকার চাইছে যে তালেবান মৌলিক অধিকার ও স্বচ্ছতা বজায় রাখুক। এই বাস্তবতার মধ্যে কূটনৈতিক আলাপব্যাপার ও দফায়-দফায় ‘বন্দি-আপোস’ চেষ্টা দেখা যাচ্ছে।
তালেবানের অবস্থান ও লক্ষ্য — বিশ্লেষণ
তালেবান এখন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, অর্থনৈতিক কার্যাবলি ও নিরাপত্তা নিয়ে চাপভাড়ায় আছে। তারা অনেকে বলেন বৈধতা ও অর্থমুখী সুযোগ পেতে চায়—তাই কখনও কূটনৈতিক দরজাও খুলছে। একই সঙ্গে তারা অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ, বিশেষত অনতিঅধিক সামাজিক নিয়ম আরোপ করে যাচ্ছে, যা পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে মূলীদারি দ্বন্দ্ব তৈরি করে। কৌশলগত দিক থেকে তালেবান চান কোনও বড় শক্তির সঙ্গে সরাসরি সংঘাত এড়িয়ে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উপকার পাওয়া।
কী ঝুঁকি আছে?
আন্তর্জাতিক তহবিল ও সাহায্য প্রায়শই তালেবানের মাধ্যমে সরাসরি বিতরণে বাধা পায়; ফলে দুর্ভিক্ষঝুঁকি ও মানবসেবার ক্ষতি বাড়ছে।
বাগরাম বিমানঘাঁটির মতো ইস্যুতে বড়ীকথা ও দাবি-প্রত্যাহার Region-এ নতুন জ্বালানি যোগ করতে পারে (উপকেন্দ্রীয় শক্তি-রাজনীতি)।
আন্তর্জাতিক পাঠ
চীন ও রাশিয়া: তারা আফগানিস্তানে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী; তালেবানও তুলনামূলকভাবে পূর্বমুখী সম্পর্ক বাড়াচ্ছে। এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি বহিষ্কার করা নয়, কিন্তু প্রভাববিস্তার নিয়ে নতুন প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা দেবে।
আঞ্চলিক শক্তিগুলো (পাকিস্তান, ভারত, ইরান): প্রত্যেকেরই নিজস্ব নিরাপত্তা-আর্থিক আগ্রহ আছে; ফলে আফগানিস্তান কেবল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নয়—একটি বহুমাত্রিক কূটনীতির ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে।
এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবান সম্পর্ক পুনর্গঠনে আছে—এটি পুরোপুরি কাব্য নয়, বরং অনিশ্চিত কূটনীতি ও ব্যবহারিক সমস্যার মিশ্রণ। সংবাদ উপস্থাপনের দায়িত্ব হলো: (ক) সত্যপুষ্টি বজায় রাখা, (খ) মানবাধিকার ও মানবতাবাদী প্রভাবকে অগ্রাধিকার দেওয়া, এবং (গ) কূটনৈতিক বক্তব্য ও সরকারি বিবৃতি যাচাই করে পাঠককে স্পষ্ট প্রেক্ষিত দেওয়া। আন্তর্জাতিক মহলকে চাইতে হবে মানবতাবাদী সহায়তা মানুষের কাছে পৌঁছুক—রাজনীতি নয়, মানুষ প্রথমে।