বাস্তবায়নের ৯ দফা সুপারিশসহ জুলাই জাতীয় সনদের সমন্বিত খসড়া আজ বুধবার রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হচ্ছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এই খসড়ায় এমন বিধান রাখা হয়েছে যে, সনদের বৈধতা আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না। পাশাপাশি এর কোনো ধারা বা নীতি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলেও সনদকে প্রাধান্য দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে।
খসড়ায় বলা হয়েছে, নির্বাচনের আগেই আশু বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশগুলো বর্তমান সরকারের মেয়াদে কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে হবে। এতে গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট, সংস্কার কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া, দুই দফা সংলাপে সিদ্ধান্ত হওয়া ৮২টি বিষয় (নোট অব ডিসেন্টসহ) এবং সনদ বাস্তবায়নের ৯ দফা অঙ্গীকার অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, ভাষাগত যাচাই শেষে আজই খসড়া দলগুলোর কাছে পাঠানো হচ্ছে, যার ভিত্তিতে চূড়ান্ত সনদ প্রণয়ন করা হবে। অঙ্গীকারনামায় ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে প্রাণহানি, ক্ষয়ক্ষতি ও জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি এবং সনদের ব্যাখ্যা, প্রয়োগ ও বৈধতার এখতিয়ার আপিল বিভাগের ওপর ন্যস্ত করার প্রস্তাব রয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, সনদকে আইনি ও সাংবিধানিক সুরক্ষা দিতে সংবিধান ও অন্যান্য আইন প্রয়োজনমতো সংশোধন বা পুনঃলিখন করা হবে। পাশাপাশি গণঅভ্যুত্থানের সময়ের হত্যাকাণ্ডের বিচার, শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা এবং আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের বিষয়েও রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকার নেওয়া হবে।
গত রোববার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকে সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিতে প্রস্তাব চাওয়া হয়েছে, যা আগামী বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনায় আসবে। এর পর রাজনৈতিক ঐকমত্য গড়তে তৃতীয় দফা সংলাপ শুরু হবে।
উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত ছয় কমিশনের সমন্বয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন মার্চ থেকে ৩২টি দল ও জোটের সঙ্গে আলোচনায় বসে ১৬৬টি প্রস্তাব নিয়ে কাজ করেছে। জুলাইয়ের শেষে ৭ দফার প্রাথমিক খসড়া পাঠানো হলেও বেশ কয়েকটি দল তাৎক্ষণিক বাস্তবায়ন ও আইনি ভিত্তি দাবি করে।
এদিকে কমিশনের মেয়াদ এক মাস বাড়িয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।