
মুহাম্মদ সোহেল রানাঃ যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে মূলত তেল রপ্তানি, মাদক পাচার ও রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সামরিক সম্পর্কের কারণে।
যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে ভেনেজুয়েলার তেল শিল্পকে লক্ষ্য করছে। সম্প্রতি তারা কিউবা-গামী একটি তেল ট্যাঙ্কার আটক করেছে, যার ফলে প্রায় ১.১ থেকে ১.৯ মিলিয়ন ব্যারেল তেল বাজেয়াপ্ত হয়। এর বাজারমূল্য আনুমানিক ৫০ থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার। ওয়াশিংটন অভিযোগ করছে, ভেনেজুয়েলা অবৈধভাবে তেল বিক্রি করে রাষ্ট্রীয় আয়ের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে টিকিয়ে রাখছে।
নতুন নিষেধাজ্ঞা: মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ সম্প্রতি ছয়টি কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, যারা ভেনেজুয়েলার তেল পরিবহনে জড়িত। এসব কোম্পানি মাদুরোর ঘনিষ্ঠ মহলের সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি করা হয়েছে।
মাদক ও নিরাপত্তা ইস্যু: যুক্তরাষ্ট্র বলছে, ভেনেজুয়েলার তেল পরিবহনের পাশাপাশি মাদক পাচারও বাড়ছে। এ কারণে তারা ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে ১৫ হাজার সেনা, যুদ্ধবিমান ও নৌবাহিনী মোতায়েন করেছে।
রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক: ভেনেজুয়েলা রাশিয়ার তৈরি ট্যাঙ্ক, আর্মড ভেহিকল ও এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ব্যবহার করছে। মাদুরো দাবি করেছেন, তার দেশে ৮ মিলিয়নের বেশি মিলিশিয়া সদস্য প্রস্তুত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে। এই রাশিয়া-ভেনেজুয়েলা সামরিক সহযোগিতা ওয়াশিংটনের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ।
ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট: বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপকে “মনরো ডকট্রিন”-এর আধুনিক রূপ হিসেবে দেখা যায়। দুই শতাব্দী আগে ঘোষিত এই নীতি অনুযায়ী, লাতিন আমেরিকা অঞ্চলে ইউরোপীয় শক্তির প্রভাব ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে প্রধান নিয়ন্ত্রক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিল। আজও সেই প্রভাব বজায় রাখতে তারা ভেনেজুয়েলাকে কঠোরভাবে চাপ দিচ্ছে।
তেল বাজেয়াপ্ত ও নিষেধাজ্ঞা ভেনেজুয়েলার অর্থনীতিকে দুর্বল করার কৌশল। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ভেনেজুয়েলা মাদক পাচারে জড়িত। ভেনেজুয়েলা রাশিয়ার অস্ত্র ব্যবহার করছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকি। লাতিন আমেরিকায় যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য বজায় রাখার প্রচেষ্টা।
আমেরিকা বাংলা | আমেরিকার বাংলা খবর, কমিউনিটি ও বিশ্ব সংবাদ আমেরিকায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য সর্বশেষ বাংলা খবর, কমিউনিটি সংবাদ ও বিশ্ব আপডেট।