১৯ দেশের অভিবাসীদের গ্রিন কার্ড আবার যাচাই করবে ট্রাম্প প্রশাসন.

১৯ দেশের অভিবাসীদের গ্রিন কার্ড আবার যাচাই করবে ট্রাম্প প্রশাসন
১৯ দেশের অভিবাসীদের গ্রিন কার্ড আবার যাচাই করবে ট্রাম্প প্রশাসন

মুহাম্মদ সোহেল রানাঃ বিশ্বের ১৯টি দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা অভিবাসীদের গ্রিনকার্ড পুনরায় যাচাই করবে ট্রাম্প প্রশাসন। মার্কিন নাগরিকত্ব ও অভিবাসন সংস্থার প্রধান জোসেফ এডলো এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে এ ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছেন। ট্রাম্পের নির্দেশ, “যেসব দেশ নিয়ে উদ্বেগ আছে, সেসব দেশ থেকে আসা প্রতিটি বিদেশির গ্রিন কার্ড পূর্ণাঙ্গ ও কঠোরভাবে পুনঃপর্যালোচনা” করতে, বলেন মি. এডলো।

বিবিসি’র পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল কোন দেশগুলো তালিকায় রয়েছে, তখন সংস্থাটি হোয়াইট হাউসের জুন মাসের একটি ঘোষণার দিকে ইঙ্গিত করে, যেখানে ১৯ টি দেশের নাম ছিল। চৌঠা জুনের সেই ঘোষণার শিরোনাম ছিল – রেসট্রিক্টিং দ্য এন্ট্রি অফ ফরেন ন্যাশনালস্ টু প্রটেক্ট দ্য ইউনাইটেড স্টেটস্ ফ্রম ফরেন টেররিস্টস্ অ্যান্ড আদার ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড পাবলিক সেফটি থ্রেটস্।

মানে, বিদেশি সন্ত্রাসী এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও জননিরাপত্তার জন্য হুমকি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সুরক্ষার জন্য বিদেশি নাগরিকদের প্রবেশে বিধিনিষেধ। সেখানে ১২টি দেশের নাগরিকদের প্রবেশে ওপর বিধিনিষেধ পুরোপুরি আরোপের কথা বলা হয়েছিল। দেশগুলো হলো – আফগানিস্তান, বার্মা বা মিয়ানমার, শাড, রিপাবলিক অফ দ্য কঙ্গো, ইকোয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান এবং ইয়েমেন।

আর সাতটি দেশের ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেওয়া হয়। সেগুলো হলো – বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান ও ভেনেজুয়েলা। সর্বশেষ বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে এক আফগান নাগরিকের গুলিতে দুই ন্যাশনাল গার্ড সদস্য গুরুতর আহত হওয়ার অভিযোগ ওঠার পর গ্রিন কার্ড পুনরায় যাচাই করার ঘোষণাটি আসে। গুলিবিদ্ধ দুই জনের মধ্যে একজন পরে মারা যান। এই ঘটনায় অভিযুক্ত রহমানুল্লাহ লাখানওয়াল ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন।

আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর আফগানদের জন্য বিশেষ অভিবাসন সুরক্ষা কর্মসূচি চালু করা হয়েছিল। সেই কর্মসূচির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে আসেন লাখানওয়াল। এদিকে, বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার বলেছেন যে তার প্রশাসন ‘তৃতীয় বিশ্বের সব দেশ’ থেকে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধ করার জন্য কাজ করবে, যাতে যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে পুনরুদ্ধার হতে পারে।

নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশালে ট্রাম্প লিখেছেন, তিনি ‘অ-নাগরিকদের’ জন্য সব ধরনের ফেডারেল সুবিধা ও ভর্তুকি বন্ধ করবেন। তিনি আরো যোগ করেছেন, “যারা অভ্যন্তরীণ শান্তি বিঘ্নিত করে তাদের নাগরিকত্ব বাতিল করা হবে এবং যেকোনো বিদেশি নাগরিক যদি জনভার হয়ে ওঠে, নিরাপত্তা ঝুঁকি সৃষ্টি করে বা পশ্চিমা সভ্যতার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, তবে তাদের বহিষ্কার করা হবে”।

যুক্তরাষ্ট্রের সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস (USCIS) জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে তারা একটি “পূর্ণাঙ্গ ও কঠোর পুনঃপরীক্ষা” শুরু করেছে। এই যাচাই প্রক্রিয়া মূলত সেইসব অভিবাসীদের জন্য, যারা “উদ্বেগজনক দেশ” থেকে গ্রিন কার্ড পেয়েছেন। প্রশাসনের ভাষ্য অনুযায়ী, মোট ১৯টি দেশ এই তালিকায় রয়েছে।

ওয়াশিংটন ডিসিতে ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের ওপর হামলার পর এই সিদ্ধান্ত আসে। হামলাকারী একজন আফগান নাগরিক ছিলেন বলে জানা গেছে। এর পরই ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসন নীতিতে আরও কঠোর অবস্থান নেয়।

USCIS পরিচালক জোসেফ এডলো জানিয়েছেন, প্রতিটি গ্রিন কার্ডধারীর নথি নতুন করে যাচাই করা হবে। তিনি বলেন, “জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় এই পদক্ষেপ জরুরি।” তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এটি অভিবাসীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ এবং আতঙ্ক সৃষ্টি করবে।

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত হাজার হাজার অভিবাসী এই পুনঃপরীক্ষার আওতায় পড়বেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এতে অভিবাসীদের মধ্যে অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা বাড়বে। একই সঙ্গে অভিবাসন নীতিকে ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্ক আরও তীব্র হতে পারে। তথ্যসূত্র:-বিবিসি বাংলা

আরও দেখুন

যুক্তরাষ্ট্র কেন ভেনেজুয়েলাকে নিশানা করছে?

যুক্তরাষ্ট্র কেন ভেনেজুয়েলাকে নিশানা করছে?

মুহাম্মদ সোহেল রানাঃ যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে মূলত তেল রপ্তানি, মাদক পাচার ও …