আমেরিকায় বাংলাদেশীদের জন্য নতুন নিয়ম – না জানলে ৫০০০ ডলার জরিমানা!

আমেরিকায় বাংলাদেশীদের জন্য নতুন নিয়ম – না জানলে ৫০০০ ডলার জরিমানা!
আমেরিকায় বাংলাদেশীদের জন্য নতুন নিয়ম – না জানলে ৫০০০ ডলার জরিমানা!

আমেরিকা বাংলা ডেস্ক –আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশী প্রবাসীদের জন্য ২০২৫ সাল থেকে সোশ্যাল সিকিউরিটি সংক্রান্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন কার্যকর হতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সোশ্যাল সিকিউরিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এসএসএ) এবং বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে জারি করা নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, এসব নিয়ম মেনে চলা প্রবাসীদের জন্য অত্যন্ত জরুরি। অন্যথায় আর্থিক ক্ষতি, আইডেন্টিটি চুরি বা সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর (এসএসএন) বাতিলের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

এসএসএন শুধু নয়-অঙ্কের একটি নম্বর নয়—এটি একজন প্রবাসীর চাকরি, ব্যাংকিং, ট্যাক্স, এমনকি অবসরের সুরক্ষার মূল ভিত্তি। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কোনো কোম্পানি এসএসএন ছাড়া কর্মী নিয়োগ দিতে পারবে না। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়া বা ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন—সব ক্ষেত্রেই এসএসএন বাধ্যতামূলক থাকবে।

এসএসএ-র সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে প্রায় ১২ হাজার বাংলাদেশী প্রবাসী এসএসএন ফ্রডের শিকার হয়েছেন, যার গড়ে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ৮,৫০০ ডলার পর্যন্ত। ফিশিং ইমেইল, ভুয়া ফোন কল বা সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্যামের মাধ্যমে এসব প্রতারণা ঘটে। এসএসএ কখনো ফোনে বা ইমেইলে এসএসএন নম্বর চায় না, তাই এ ধরনের বার্তা পাওয়া মাত্রই সতর্ক হওয়া উচিত। অফিসিয়াল তথ্য পাওয়া যাবে কেবল www.ssa.gov ওয়েবসাইটে বা 1-800-772-1213 নম্বরে কল করে।

তবে নতুন নীতিমালায় প্রবাসীদের জন্য কিছু ইতিবাচক দিকও রয়েছে। ৫০ বছর বা তার বেশি বয়সী এবং যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ১০ বছর কাজ করা বাংলাদেশীরা পাবেন সর্বোচ্চ ৩,০০০ ডলার পর্যন্ত ‘এসএসএন বোনাস ক্রেডিট’। এছাড়া, ‘mySocialSecurity’ পোর্টালে এখন বাংলা ভাষায় অনলাইন সেবা চালু হয়েছে, যা প্রবাসীদের জন্য সহজলভ্য ও সময়সাশ্রয়ী। নিউ ইয়র্ক ও ওয়াশিংটন কনস্যুলেটে ‘এসএসএন হেল্প ডেস্ক’ চালু হয়েছে, যেখানে ফ্রি ভেরিফিকেশন এবং ফ্রড রিপোর্ট করা যাবে।

যদি কারও এসএসএন হারিয়ে যায়, তবে প্রথমে ssa.gov ওয়েবসাইটে রিপোর্ট করতে হবে। এরপর ক্রেডিট ব্যুরো (Equifax, TransUnion) এ ক্রেডিট ফ্রিজ করতে হবে। প্রয়োজনে বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করা যেতে পারে +১ (২১২) ২২৭-১৫১৫ নম্বরে। এরপর ১০ দিনের মধ্যে নতুন এসএসএনের জন্য আবেদন করা যাবে।

দীর্ঘমেয়াদে এসএসএ সুবিধার মধ্যে রয়েছে অবসর ভাতা (৬২ বছর বয়সে মাসে ১,৫০০–৩,০০০ ডলার), ৬৫ বছর বয়সে মেডিকেয়ার স্বাস্থ্যসেবা, এবং মৃত্যুর পর পরিবারের জন্য সারভাইভার বেনিফিট। এছাড়া, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে টোটালাইজেশন চুক্তি কার্যকর রয়েছে, যার ফলে যারা অন্তত ১০ বছর যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করেছেন, তারা বাংলাদেশে বসে এসএসএ বেনিফিট পাওয়ার সুযোগ পাবেন। আবেদন করা যাবে দূতাবাসের মাধ্যমে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এসএসএন এখন শুধু পরিচয় নয়, বরং প্রবাসী জীবনের নিরাপত্তার মেরুদণ্ড। তাই প্রতারণা থেকে বাঁচতে সচেতনতা বাড়ানো এবং অফিসিয়াল তথ্য যাচাই করে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। প্রবাসী বাংলাদেশীদের উদ্দেশ্যে বলা যায়—সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর আপনার অধিকার, সুরক্ষা এবং ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা। ২০২৫ সালের এই নতুন নিয়মগুলো ভালোভাবে জানুন এবং সময়মতো পদক্ষেপ নিন, কারণ আপনার পরিশ্রমের নিরাপত্তা এখন আপনার হাতেই।

আরও দেখুন

জেলেনস্কি বললেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা কঠিন হলেও ফলপ্রসূ

“যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা কঠিন হলেও ফলপ্রসূ”-জেলেনস্কি

মুহাম্মদ সোহেল রানাঃ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের চলমান প্রসঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান …