নেতিবাচক জনমত জরিপের ফলে অভিবাসন প্রয়োগ কৌশল বদলাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন!

অভিবাসন প্রয়োগ কৌশল বদলাচ্ছে স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা বিভাগ

ইমা এলিস | নিউইয়র্ক প্রতিনিধি: নেতিবাচক জনমত জরিপের চাপে যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা বিভাগ (ডিএইচএস) অভিবাসন আইন প্রয়োগে কৌশলগত পরিবর্তনের পথে হাঁটছে। দেশজুড়ে ব্যাপক প্রচার পাওয়া বড় আকারের অভিযান থেকে সরে এসে সংস্থাটি এখন তুলনামূলকভাবে সীমিত ও লক্ষ্যনির্ভর পদক্ষেপ গ্রহণের পরিকল্পনা করছে।

ডিএইচএসের একাধিক সূত্র নিউজনেশনের সাংবাদিক আলি ব্র্যাডলিকে জানিয়েছে, কমান্ডার গ্রেগরি বোভিনোর অধীনে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের বর্ডার প্যাট্রোল ইউনিটগুলো এখন তাদের নজর কেন্দ্রীভূত করবে নির্দিষ্ট শ্রেণির ওপর—বিশেষ করে গুরুতর অপরাধে দণ্ডিত অবৈধভাবে অবস্থানরত অভিবাসীদের বিরুদ্ধে। এর ফলে হোম ডিপোর মতো স্থানে পূর্বে যেসব ব্যাপক অভিযান চালানো হতো, সেগুলো আর নিয়মিত বা বাধ্যতামূলকভাবে পরিচালিত নাও হতে পারে বলে ব্র্যাডলির একান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ট্রাফিক স্টপের মাধ্যমেও আইন প্রয়োগ কার্যক্রম জোরদার করা হতে পারে। তবে প্রকাশ্য রাস্তায় সাধারণ মানুষকে ধরে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য আগের মতো চোখে পড়বে না বলে শুক্রবার রাতে নিউজনেশনের ‘দ্য হিল’ অনুষ্ঠানে সঞ্চালক ব্লেক বারম্যানের সঙ্গে আলোচনায় জানান ব্র্যাডলি।

এই কৌশলগত পরিবর্তন এসেছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন দমন নীতির প্রতি জনসমর্থন ক্রমাগত কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে। অভিবাসন ইস্যু ছিল তার ২০২৪ সালের নির্বাচনী প্রচারের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ এবং দ্বিতীয় মেয়াদের গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার। চলতি সপ্তাহের শুরুতে প্রকাশিত পাবলিক রিলিজিয়ন রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআরআই)–এর এক জরিপে দেখা যায়, অভিবাসন বিষয়ে ট্রাম্পের কার্যক্রমের প্রতি সমর্থন মার্চের ৪২ শতাংশ থেকে নেমে এসে দাঁড়িয়েছে ৩৩ শতাংশে।

এছাড়া নভেম্বরে প্রকাশিত ইউগভের এক জরিপে দেখা গেছে, প্রশাসনের গণ–নির্বাসন নীতির অংশ হিসেবে পরিচালিত ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) অভিযানের প্রতি অধিকাংশ মার্কিন নাগরিক অসন্তুষ্ট। একই সঙ্গে, স্বাস্থ্যনীতি বিষয়ক গবেষণা সংস্থা কেএফএফ ও দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের গত মাসের এক যৌথ জরিপে অংশ নেওয়া অভিবাসীদের প্রায় অর্ধেক বলেছেন, ট্রাম্প পুনরায় হোয়াইট হাউসে ফেরার পর তারা ও তাদের পরিবার নিজেদের ‘আগের চেয়ে কম নিরাপদ’ মনে করছেন।

চলতি বছরে লস অ্যাঞ্জেলেস, শিকাগো এবং নর্থ ক্যারোলিনার শার্লটসহ বিভিন্ন শহরে বর্ডার প্যাট্রোলের অভিবাসন আইন প্রয়োগ কার্যক্রম দৃশ্যমান হয়েছে। এসব অভিযানের বিরুদ্ধে একাধিক স্থানে বিক্ষোভ ও কোথাও কোথাও সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। অনেক সমালোচকের মতে, এসব অভিযান ছিল অতিরিক্ত কঠোর।

তবে আলি ব্র্যাডলি জানান, কৌশল পরিবর্তনের ঘোষণা সত্ত্বেও নিউ অরলিন্সে সম্প্রতি শুরু হওয়া “ক্যাটাহুলা ক্রাঞ্চ” নামের অভিযান চলমান থাকবে। ডিএইচএসের তথ্য অনুযায়ী, লুইজিয়ানার এই শহরে ইতোমধ্যে ২৫০ জনের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এবং অভিযানের লক্ষ্য শেষ পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার গ্রেপ্তারে পৌঁছানো।

আরও দেখুন

জনমত ও বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে অভিবাসন প্রয়োগ কৌশল পর্যালোচনায় ট্রাম্প প্রশাসন

আমেরিকা বাংলা ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নীতি নিয়ে চলমান রাজনৈতিক বিতর্ক ও জনমতের প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প প্রশাসন …