
মুহাম্মদ সোহেল রানাঃ মার্কিন অনুসন্ধানী অনুষ্ঠান Fault Lines তাদের নতুন পর্ব ‘Target Tehran’-এ ইরানে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ হামলার মানবিক ক্ষয়ক্ষতি তুলে ধরেছে। ১২ দিনব্যাপী এই সংঘাতে হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়, যেখানে সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি, হাসপাতাল এমনকি কারাগারও হামলার শিকার হয়।
ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে, হামলার মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই অভিযানে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে একে আখ্যা দেন “ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুহূর্ত”। তবে বাস্তবে হামলার শিকার হয়েছেন সাধারণ মানুষ—শিশু, নারী ও পরিবার।
ডকুমেন্টারিতে তুলে ধরা হয়েছে হৃদয়বিদারক কয়েকটি ঘটনা: ১২ বছরের আমির আলী ও তার বাবা নিহত হয়েছেন বিমান হামলায়। দুই মাস বয়সী রায়ান ও তার বাবা-মা প্রাণ হারিয়েছেন। ৪ বছরের কিয়ান বেঁচে গেলেও তার শরীরে ভয়াবহ দগ্ধ ক্ষত, যা আজীবন তাকে ভোগাবে। মরিয়ম বাহেদ পানাহ এভিন কারাগারে হামলার সময় নিহত হন; তার ভাই সাক্ষাৎকারে শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়ে একটি বিরল অন-ক্যামেরা সাক্ষাৎকারে দেশটির উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। তিনি বলেন, এই হামলা শুধু ইরানের নিরাপত্তা নয়, বরং গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। দেশটি এখন নতুন করে আরেকটি যুদ্ধের আশঙ্কায় প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ডকুমেন্টারিটি শেষ হয় একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন দিয়ে: “কেন এখন?”
ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের দাবি অনুযায়ী এটি ছিল পারমাণবিক কর্মসূচি ঠেকানোর পদক্ষেপ। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, হামলার সময় ও লক্ষ্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
‘Target Tehran’ শুধু একটি ডকুমেন্টারি নয়, বরং ইরানে সংঘটিত হামলার মানবিক বিপর্যয়ের প্রতিচ্ছবি। শিশুদের মৃত্যু, পরিবার হারানোর বেদনা এবং আহতদের দীর্ঘ পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া বিশ্বকে মনে করিয়ে দেয়,—যুদ্ধের আসল মূল্য দেয় সাধারণ মানুষ। তথ্যসূত্র:- আল-জাজিরা
আমেরিকা বাংলা | আমেরিকার বাংলা খবর, কমিউনিটি ও বিশ্ব সংবাদ আমেরিকায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য সর্বশেষ বাংলা খবর, কমিউনিটি সংবাদ ও বিশ্ব আপডেট।