হাওয়া ভবন: বাংলাদেশের রাজনীতির অঘোষিত শক্তিকেন্দ্র না কি শুধুই একটি রাজনৈতিক গল্প?

ফাইল ফটো: হাওয়া ভবন

আমেরিকা বাংলা ডেস্ক: কোনো সরকারি ভবন নয়, তবুও অভিযোগ ছিল দেশের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসত এখান থেকে—এই ভবনটি পরিচিত “হাওয়া ভবন” নামে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক সময় এই নামটি এতটাই আলোচিত হয়ে ওঠে যে, অনেকেই এটিকে রাষ্ট্র পরিচালনার আড়ালের শক্তিকেন্দ্র হিসেবে উল্লেখ করেন।

২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি সরকারের সময়ে ঢাকার বনানীতে অবস্থিত এই ব্যক্তিগত বাড়িটি নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা ছড়িয়ে পড়ে। ধারণা করা হয়, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো এই ভবন থেকে। সরকারি পদায়ন, টেন্ডার, প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এখান থেকে নেওয়া হতো বলেও অভিযোগ ওঠে।

“হাওয়া ভবন” নামটি দেওয়া হয় মূলত ব্যঙ্গাত্মকভাবে—কারণ, কেউ দাবি করতেন যে অনেক সিদ্ধান্ত আসত ‘হাওয়ায় ভেসে’। অর্থাৎ কোনো আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া ছাড়াই অঘোষিতভাবে প্রভাব বিস্তার করা হতো এখান থেকে।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার পর সমালোচনার মাত্রা আরও তীব্র হয়। পরবর্তীতে ২০০৭ সালে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এই ভবনকে তদন্তের আওতায় আনা হয়। আন্তর্জাতিক কিছু গণমাধ্যমেও “Hawa Bhaban” নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়।

তবে বিএনপির দাবি, হাওয়া ভবনের গল্পটি মূলত রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডা। তাদের মতে, এটি কখনো আনুষ্ঠানিক ক্ষমতার কেন্দ্র ছিল না, বরং বিরোধী রাজনৈতিক প্রচারণার অংশ হিসেবে এই নামটি জনপ্রিয় করা হয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, হাওয়া ভবন একটি ভবনের চেয়েও বেশি—এটি বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক প্রকার মনস্তাত্ত্বিক প্রতীক, যা গোপন প্রভাব, অঘোষিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং ক্ষমতার নেপথ্য কৌশলের প্রতিনিধিত্ব করে।

সত্য-মিথ্যা বিচারের শেষ কথা এখনও ইতিহাস বলেনি। তবে এতটুকু নিশ্চিত—“হাওয়া ভবন” নামটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে স্থায়ীভাবে স্থান করে নিয়েছে।

আরও দেখুন

প্রস্তাবনা দিয়েও মেলেনি সাড়া, শঙ্কায় আনঅফিশিয়াল মোবাইল বিক্রেতারা

প্রস্তাবনা দিয়েও মেলেনি সাড়া, শঙ্কায় আনঅফিশিয়াল মোবাইল বিক্রেতারা

মুহাম্মদ সোহেল রানাঃ  অবৈধ মোবাইল হ্যান্ডসেট বন্ধ, মোবাইল ফিনান্সিয়াল সেবায় আর্থিক জালিয়াতি সনাক্ত, মোবাইল হ্যান্ডসেট …