
মুহাম্মদ সোহেল রানাঃ ১৯৭১ সালে প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন মাদককে ঘোষণা করেছিলেন “জনশত্রু নম্বর এক”। সেই থেকে শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রের বহুল আলোচিত ‘ওয়ার অন ড্রাগস’ বা মাদকবিরোধী যুদ্ধ। লক্ষ্য ছিল রাস্তাঘাট থেকে মাদক নির্মূল, পাচারচক্র ভেঙে দেওয়া এবং আমেরিকানদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা।
কিন্তু ৫০ বছর পরও বাস্তবতা ভিন্ন। বিলিয়ন ডলার ব্যয়, কঠোর আইন, সামরিক অভিযান ও আন্তর্জাতিক চাপ—সবকিছুর পরও মাদক প্রবাহ কমেনি। বরং সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে, যেখানে পাচারচক্র আরও শক্তিশালী হয়েছে।
কারাগার ভরে গেছে: যুক্তরাষ্ট্রে লাখ লাখ মানুষ মাদক-সম্পর্কিত অপরাধে বন্দি হয়েছে। মেক্সিকো, কলম্বিয়া ও অন্যান্য দেশে মাদকচক্রের সহিংসতা ভয়াবহ আকার নিয়েছে। মাদক উৎপাদন রেকর্ড উচ্চতায়: জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৩ সালে কোকেন উৎপাদন প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩,৭০০ টনের বেশি।
বিশ্বজুড়ে প্রায় ২৫ মিলিয়ন মানুষ কোকেন ব্যবহার করছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে এসে মাদকবিরোধী যুদ্ধকে নতুন ভূরাজনৈতিক রূপ দিয়েছেন। ভেনেজুয়েলার কার্টেলকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।ক্যারিবীয় অঞ্চলে সামরিক অভিযান বাড়ানো হয়েছে। মাদকবিরোধী নীতি এখন শুধু অপরাধ দমন নয়, বরং কূটনৈতিক চাপের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে।
৫০ বছরের এই যুদ্ধ মাদক প্রবাহ কমাতে ব্যর্থ হলেও রাজনৈতিক ও সামরিক প্রভাব বিস্তারের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। সমালোচকরা বলছেন, এটি আসলে ছিল “মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ”, যা সমাজে বৈষম্য ও সহিংসতা বাড়িয়েছে। প্রশ্ন উঠছে: এত ব্যয় ও ত্যাগের পরও যদি মাদক প্রবাহ কমানো না যায়, তবে এই যুদ্ধের প্রকৃত অর্জন কী?
আমেরিকা বাংলা | আমেরিকার বাংলা খবর, কমিউনিটি ও বিশ্ব সংবাদ আমেরিকায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য সর্বশেষ বাংলা খবর, কমিউনিটি সংবাদ ও বিশ্ব আপডেট।