
মুহাম্মদ সোহেল রানা, আমেরিকা বাংলা ডেস্কঃ শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড: বাংলাদেশে রাজনৈতিক বিভাজন আরও ঘনীভূত হবে? সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঘোষিত মৃত্যুদণ্ডের রায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক নতুন উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে। ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলনে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে’ অভিযুক্ত হয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (ICT) কর্তৃক এই রায় ঘোষিত হয়। তবে এই রায়কে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে রাজনৈতিক মেরুকরণ আরও তীব্র হয়ে উঠেছে।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের অবস্থান- দলটি রায়কে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ বলে অভিহিত করেছে। শেখ হাসিনা নিজেও এক বিবৃতিতে বলেন, “এই রায় একটি অনির্বাচিত সরকারের পক্ষপাতদুষ্ট সিদ্ধান্ত, যেখানে আমাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি”। জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন রায়কে ‘ভুক্তভোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত’ বললেও মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করেছে। তারা বাংলাদেশে নিরাপত্তা খাতে সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছে।
রাজনৈতিক বিভাজনের নতুন অধ্যায়ে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ: শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের পর দলটি কার্যত নিষিদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। অনেক নেতাকর্মী গোপনে কাজ করছেন, কেউ কেউ দেশত্যাগ করেছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, ১৯৭৫ সালের পর এই প্রথম দলটি এত বড় সংকটে পড়েছে।
বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দল রায়কে ‘বিচারের বিজয়’ হিসেবে দেখছে। তবে তারা এখনো রাস্তায় বড় ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করেনি।
শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে নির্বাসনে রয়েছেন। রায় কার্যকর করতে হলে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা ও আপিল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। শহরাঞ্চলে রায়ের পক্ষে-বিপক্ষে মিছিল দেখা যাচ্ছে, গ্রামাঞ্চলে আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই রায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিভাজনকে আরও গভীর করবে। একদিকে এটি আইনের শাসনের বার্তা দিতে পারে, অন্যদিকে এটি প্রতিহিংসার রাজনীতিকে উসকে দিতে পারে।
এই মুহূর্তে বাংলাদেশ এক সংকটময় মোড়ে দাঁড়িয়ে। শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড শুধু একটি আইনি রায় নয়, এটি একটি রাজনৈতিক ভূমিকম্প—যার কম্পন দীর্ঘদিন ধরে অনুভূত হবে।
আমেরিকা বাংলা | আমেরিকার বাংলা খবর, কমিউনিটি ও বিশ্ব সংবাদ আমেরিকায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য সর্বশেষ বাংলা খবর, কমিউনিটি সংবাদ ও বিশ্ব আপডেট।